বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার বলেন, আওয়ামীলীগ ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর শিবির নেতাকর্মীদের হত্যা করে বাংলার জমিন থেকে ইসলামী আন্দোলনকে নির্মূল করতে চেয়েছিল। কিন্তু খুনের রাজনীতির ধারক আওয়ামীলীগের স্বপ্ন পূরণ হয়নি বরং বুমেরাং হয়েছে। শহীদ মুজাহিদ, শিপন মাসুমদের রক্ত বৃথা যাবেনা তা আজ প্রমাণিত সত্য।
তিনি আজ শহীদ মুজাহিদুল ইসলামসহ ২৮ অক্টোবরের শহীদদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন। ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের আয়োজনে আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর এক মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগরী সভাপতি তামিম হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোবারক হোসেন।
শিবির সভাপতি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাবার কথা ছিল, তা সম্ভব হয়নি অপশাসন, সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতির কারণেই। অপশাসন ও সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতির সিংহভাগ দায় আওয়ামীলীগের ওপরই বর্তায়। ৭১ পরবর্তী সময়ে রক্ষী বাহিনী গঠন থেকে শুরু করে পরবর্তী সময়ে আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীদের দিয়ে একের পর এক মানুষ খুন করেছে। বাকশালী মনোভাবাপন্ন এই দলকে কোনভাবেই গণতান্ত্রিক বলা যায় না। উল্টো তারা যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মুজাহিদ-মাসুমদের হত্যা করে আওয়ামীলীগ যে কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে তার ক্ষত আজো বাংলাদেশ বয়ে বেড়াচ্ছে। সেদিনের খুনীরা আওয়ামী প্রশ্রয়ে আজো সক্রিয়। তারাই পরবর্তী সময়ে ইসলামপ্রেমী জনগণকে হত্যা করেছে। আল্লামা সাঈদীসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের রায়ের পরবর্তী সময়ে র্যাব-পুলিশকে সাথে নিয়ে গণহত্যায় মেতে উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, শাহবাগে যে আমরা তথাকথিত গণজাগরণ দেখেছি, সেই মঞ্চেও আমরা ২৮ অক্টোবরের খুনীদের সক্রিয় দেখেছি। এই খুনী-সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত শাহবাগের নাটকই সারাদেশে বিভেদের রাজনীতিকে আরো প্রকট করে তুলেছে। দেশের আপামর জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে এই খুনী-সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই।
শিবির সভাপতি বলেন, মুজাহিদ, মাসুম, শিপনদের শাহাদাত বৃথা যায়নি। তাঁদের শাহাদাত থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ ইসলামী আন্দোলনের পথে এগিয়ে এসেছে। শহীদি মিছিল যেমন দীর্ঘায়িত হয়েছে, দেশের জনগণ তেমনই জামায়াত-শিবিরের পতাকাতলে শামিল হয়েছে। অধ্যাপক গোলাম আযমের জানাজায় মানুষের যে ঢল নেমেছে, তা ইসলাম বিরোধী শক্তির পিলে চমকে দিয়েছে। মযলুম এই জননেতার প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে, তা প্রমান করেছে বাংলাদেশে জামায়াত-শিবির বিরোধী সকল অপপ্রচার বুমেরাং হয়ে তাদের দিকেই ফিরেছে।
আলোচনা সভা শেষে ২৮ অক্টোবরের শহীদ ভাইদের জন্য শিবির সভাপতির পরিচালনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।