Home Article সরকার দেশকে আবার ২৮ অক্টোবরের দিকে নিয়ে যেতে চায়!

সরকার দেশকে আবার ২৮ অক্টোবরের দিকে নিয়ে যেতে চায়!

ইতিহাসের কোনো ঘটনার দিন তারিখ ঘন্টার হিসেবে ফিরে আসে না। কিন্তু অনুরূপ আর একটি ঘটনা ঘটতেই পারে, যদি সমাজ বিজ্ঞানের সূত্রগুলো সক্রিয় থাকে। গত ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ক্ষমতা লিপ্সার চরম মাশুল দিয়েছে এদেশের সাধারণ মানুষ। সাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ আওয়ামী সন্ত্রাসের কবলে রুদ্ধ হয়েছিল সেই দিন। গোটা বিশ্ববাসী টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছে, ক্ষমতালোভী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কী পৈশাচিক বর্বরতায় সেদিন ভিন্নমতের রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করেছে। নিরীহ তরুণ তাজা রাজনৈতিক কর্মীদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে পীচঢালা কালো রাজপথ। শুধু রাজধানী ঢাকা নয় সারাদেশে তারা সেদিন পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ চারদলীয় জোটের অর্ধশত নেতা-কর্মীকে হত্যা করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা। দেশের মানুষ ২৮ অক্টোবরের মতো আর কোনো ঘটনা দেখতে চায় না। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অগণতান্ত্রিক আচরণ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জনগণ আতংকিত। ক্ষমতাসীনরা তাদের ফ্যাসিবাদী কমকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে আবার ২৮ অক্টোবর ও ১/১১ এর নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।

সেদিনের একটি ঘোষণায় রক্তাক্ত হলো বাংলাদেশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ’০৬ পল্টনের মহাসমাবেশ থেকে শেখ হাসিনা ঘোষণা করলেন লগি-বৈঠা-লাঠি নিয়ে ঢাকায় আসার জন্য। নেতাকর্মীদের বুঝতে বাকি রইল না- কী করতে হবে তাদের। সময়টিও সেভাবে বেছে নিলেন শেখ হাসিনা। সফল জোট সরকারের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাংবিধানিক ধারা সমুন্নত রেখে যখন সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তারের ঘোষণা দেবেন, তখনই সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে একটি অরাজক ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিবেশের দিকে ঠেলে দিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন বানচাল করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ।

অবরোধ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নেতকর্মীরা লগি-বৈঠা-লাঠি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। ফলে হঠাৎ করেই দেশে নেমে আসে চরম নৈরাজ্য। রাজপথ ও সভাস্থল দখলের নামে আওয়ামী লীগ আক্রমণ করে জামায়াত ও জোট নেতাকর্মীদের ওপর, শুরু হয় মুখোমুখি সংঘর্ষ। অত্যন্ত সুকৌশলে দেশকে ঠেলে দেয়া হয় অস্থিতিশীলতা ও বিশৃঙ্খলার দিকে, যার সবচেয়ে বড় শিকার সাধারণ জনগণ।

কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের পাতায় ২৮ অক্টোবর : “১৪ দলের কর্মীরা মুজাহিদকে তুলে পল্টন মোড়ে এনে বৈঠা ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে এবং খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। এক পর্যায়ে ১৪ দলের শত শত নেতাকর্মী নিহত মুজাহিদের লাশকে ঘিরে উল্লাস করে এবং বৈঠা ও লাঠি উঁচিয়ে ‘হই হই রই রই জামায়াত শিবির গেলি কই’ বলে স্লোগান দেয়।” (দৈনিক আমার দেশ, ২৯ অক্টোবর ’০৬) “বায়তুল মুকাররম উত্তর গেটে জামায়াতের সমাবেশস্থল পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। তারা তিনজন শিবির কর্মীকে প্রহার ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ত-বিত করে রাস্তায় ফেলে রাখে।” (দৈনিক ইত্তেফাক, ২৯ অক্টোবর ’০৬)

“দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আওয়ামী লীগ কর্মীরা মুক্তাঙ্গনের দিকে এসে জামায়াতের অবস্থানের দিকে গুলিবর্ষণ করতে করতে অগ্রসর হতে থাকলে গুলিবিদ্ধ হয়ে জামায়াতের দু’জন নিহত হন।” (দৈনিক নয়া দিগন্ত, ২৯ অক্টোবর ’০৬) “বিকেল পৌনে ৫টায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে মঞ্চে জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী বক্তৃতা দিতে উঠলে পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়া আওয়ামী লীগের কর্মীরা জামায়াতের সমাবেশ ল্য করে অন্তত ১২টি বোমা নিক্ষেপ করে।” (প্রথম আলো, ২৯ অক্টোবর ’০৬) “আওয়ামী লীগ কর্মীদের মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, বোমা ও ইটপাটকেল নিেেপর পর আহতদের সারি বেড়েই চলছিল।” (দৈনিক সংগ্রাম, ২৯ অক্টোবর ০৬)

কূটনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া : আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গোটা বিশ্ব-বিবেক স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনান নিজে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের মানুষকে সংযম ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করার আহবান জানান।” সূত্র : দৈনিক প্রথম আলো, ৩০ অক্টোবর ’০৬

বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন আমেরিকান রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিস গত ক’দিন ধরে বাংলাদেশে সংঘটিত রাজনৈতিক সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ ধরনের সহিংসতা যাতে ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। প্যাট্রিসিয়া এ বিউটেনিস বলেন, বাংলাদেশের একজন নাগরিক শান্তিতে নোবেল জয়ের পর গত ক’দিনের সহিংসতা সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ুণœ করেছে।” সূত্র : দৈনিক যায়যায়দিন, ৩ নভেম্বর ’০৬

“ঢাকায় ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার স্টিফেন ব্রিজেস গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, গত ক’দিনে বাংলাদেশে সহিংস ঘটনায় ব্রিটিশ সরকার উদ্বিগ্ন। তিনি সংঘাত বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আহ্বান জানান।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পে বর্তমানে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকারী জার্মান দূতাবাসের এক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ১২ জনের বেশি লোকের প্রাণহানি ও অসংখ্য আহত হওয়ার মতো দুঃখজনক ঘটনায় সারাদেশে সহিংসতা ও সংঘাত রোধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে সব দল একমত হবেন।” সূত্র : দৈনিক ইত্তেফাক, ৩০ অক্টোবর ’০৬।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমদ বলেন, “২৮ অক্টোবর আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলংকজনক অধ্যায়। এটি কোনো মতেই সমর্থন করা যায় না। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে সহিংসতা বন্ধ করে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসা উচিত। তাতেই গণতন্ত্রের বিকাশ নিশ্চিত হবে।” ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন,আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা সুষ্ঠু রাজনীতি করতে ইচ্ছুক নন। সহিংসতার মাধ্যমে তারা মতায় আসতে চান। ২৮ অক্টোবর তারই প্রমাণ। আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সক্রিয় রাখার জন্য কাজ করতে হবে। ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, “এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক একটি ঘটনা। শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে আওয়ামী লীগ জীবন্ত মানুষকে লাশ বানিয়ে ছেড়েছে। এ ধরনের ঘটনা এ দেশের গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে। আওয়ামী লীগকে সাংবিধানিক পন্থায় রাজনীতি করা উচিত।”

প্রফেসর ডা. কামরুল আহসান,“এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। অত্যন্ত পৈশাচিক কায়দায় রাজনৈতিক প্রতিপকে হত্যা করার মধ্যযুগীয় উদাহরণ। যারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।”

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট সাদেক খান বলেন,“নৈরাজ্য সৃষ্টিতে অবতীর্ণ ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও, সড়ক দখল কর্মসূচি বজায় রাখার উদ্যোগ নিয়েছে … দলীয় সঙ্কীর্ণ বুদ্ধিতে বেহুঁশ বলেই রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করে ১৪ দলের অভ্যন্তরে গেড়ে বসা নৈরাজ্য পিপাসুদের এসব অসার আস্ফালন।”

মামলার বিবরণ : ঘটনার পরদিন জামায়াতে ইসলামীর পল্টন থানা তৎকালীন আমীর এ টি এম সিরাজুল হক বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৬১(২৯/১০/০৬)। ধারা- ১৪৩/ ৩২৩/৩২৫/ ৩২৬/৩০২/ ৩০৭/ ১০৯/১১৪ দণ্ডবিধি। মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমদ, আ’লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম, আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা রাশেদ খান মেননসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এ মামলাটিই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

২৮ অক্টোবরের পৈশাচিক ঘটনায় নির্মম শিকার শিবির নেতা সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম ৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২ নভেম্বর হাসপাতালে মারা যায়। পরদিন তার বড় ভাই শামসুল আলম মাহাবুব বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি করে। যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির নানক, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়।

এছাড়া ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠা বাহিনীর নির্মমতার শিকার খন্দকার মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ১ নভেম্বর পল্টন থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং-০১ (০১/১১/০৬)। ধারা-১৪৭/ ১৪৮/ ১৪৯/ ৩২৩/ ৩২৬/ ৩০৭/ ১০৯/ ১১৪/ দণ্ডবিধি বাদি মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এসব মামলার মধ্যে জামায়াত নেতা এটিএম সিরাজুল হকের দায়ের করা মামলার তদন্ত করে এসআই আরশাদ আলী। পরবর্তীতে ডিবির ইনপেক্টর এনামুল হাসান মামলার তদন্ত করে ৫ মাস পর ৪৬ জনকে অভিযুক্ত করে গত ১১ এপ্রিল আদালতে চার্জশীট দেয়। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় ইতিহাসের ঐ পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের মামলা প্রত্যাহার করেছে।

এ মামলা প্রত্যাহারের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শহীদ জসিম উদ্দিনের পিতা আবদুর রশীদ বলেন, তারা এখন মতায়, এখন যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারে। দেশে কোনো আইন আছে বলে মনে হয় না। কারো জবাবদিহীতাও নেই। বিচার পাওয়ার অধিকার এভাবেই কেড়ে নেয়া হলো? তিনি বলেন, তদন্ত না করেই এভাবে মামলাই বাতিল করে দেয়া হলো? এর নিন্দা জানানোর ভাষাও আমাদের জানা নেই। এটা দেশের জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আরো বলেন, ২৮ অক্টোবর কী হয়েছে শুধু দেশের মানুষই নয়, সারা বিশে¡র মানুষ দেখেছে। সে দিন প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠা দিয়ে রাজপথে সাপের মতো পিটিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এর বিচার হওয়াতো দূরে থাক, এখন পুরো মামলাই প্রত্যাহার করে নেয়া হলো। অবাক কাণ্ড!

২৮ অক্টোবরের মতো কোনো নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি দেশবাসী আর দেখতে চায় না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে, এই দীর্ঘ সময়েও এদেশের রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা হস্তান্তরের একটি স্বাভাবিক শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারেনি। তাদের এই ব্যর্থতার খেসারত দিতে হচ্ছে নিরীহ শান্তিপ্রিয় জনগণকে, এমন অবস্থা আর চলতে পারে না। কিন্তু সমাধানের উপায় কি?

এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রচিন্তক ও কবি ফরহাদ মজহার বলেন,’৭২ সালের কনস্টিটিউশন ছিলো দলীয় ড্রাফট। তারা তাদের দলীয় চিন্তা এবং একজন উকিলের মুসাবিদাকে বাংলাদেশের ‘সংবিধান’ হিসেবে চাপিয়ে দেয়। এটা তো বলাই হয় যে বাংলাদেশের সংবিধান কামাল হোসেন লিখেছেন আর অনুবাদ করেছেন আনিসুজ্জামান। তো একজন ব্যক্তির রচনা কি করে একটি দেশের রাষ্ট্র গঠনের দলিল হতে পারে? আর এখন দেখুন, পঞ্চদশ সংশোধনীর পর বাংলাদেশের সংবিধান তো আসলে একটি দলেরই দলিল হয়ে গিয়েছে। এটা কোনো রাষ্ট্রের দলিল নয়। তিনি আরো বলেন, আমি এখনও বলি রাষ্ট্র গঠিত হয়নি। স্বাধীনতার পরে আমরা রাষ্ট্র গঠন করি নাই। আসলে রাষ্ট্র ব্যাপারটা কী এটা আমরা বাঙালিরা বুঝি না, দেশ ও রাষ্ট্রকে সমার্থক ভাবি। কারণ ঐতিহাসিকভাবে আমাদের বাঙালি বা বাংলাদেশীদের রাষ্ট্র গঠনের চিন্তাই নেই। আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস দেখেন, তাদেরকে সংবিধানের জন্য লম্বা লড়াই করতে হয়েছে, তাদের ড্রাফট করতে হয়েছে, ড্রাফট নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়েছে, ড্রাফটে সংশোধনী আনা হয়েছে, রেফারেন্ডামে যেতে হয়েছে।

ফরহাদ মজহার বলেন, এই যে আমরা ৫ জন এখানে বসে আছি। আমরা যদি ৫ জায়গা থেকেও আসি আমাদের সবাইকে এখন খোলা মনে রাষ্ট্র গঠনের কথা ভাবতে হবে। বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নতুনভাবে গঠন করতে হবে সেটা মোটেও কঠিন কিছু নয়।

লেখকঃ হারুন ইবনে শাহাদাত

SHARE